লক্ষ্মীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক রুবেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় সাংবাদিক কারাগারে

- আপডেট সময় : ০৬:৪৪:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক রুবেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
রুবেল সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আবিরনগর গ্রামের ফজল করিমের ছেলে। তিনি অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকামেইলের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।
পুলিশ হেফাজতে রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমি স্বাভাবিক জীবন আর পেশাগত কাজে ফিরতে চাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকা থেকে রুবেলকে মারধর করে পুলিশে তুলে দেয় ১০ থেকে ১৫ ব্যক্তি। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে
এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ভাষ্যমতে, পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য ৪ আগস্ট তিনি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হত্যা মামলায় এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলায় সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তারা সাংবাদিককে হয়রানি না করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদেরও বলেছিলেন।
রুবেলের বাবা ফজল করিম জানান, সোমবার রাতে রুবেল শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় অবস্থান করছিল। সেখানে একদল লোক এসে তাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ জানান, রুবেল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ৪ আগস্ট শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে। এতে ব্রিজের ওপরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান। এ ঘটনায় আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদি হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
একইদিন তমিজ মার্কেট এলাকায় যুবলীগ নেতা সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসা থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোঁড়া এবং সংঘর্ষ হয়। এতে শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, কাউসার হোসেন বিজয় ও ওসমান গণি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এসব হত্যা, বিস্ফোরক, হত্যা চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানা ও আদালতে পৃথক কয়েকটি মামলা হয়েছে। এদিকে সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসা থেকে পালানোর সময় পিটিয়ে ও কুপিয়ে কলেজছাত্রসহ ৮ জনকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায়ও পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।